রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। সোমবার (৩০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে একযোগে তিন সিটিতে ভোট শুরু হয়, চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত। তিন সিটিতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন বিএনপি প্রার্থীরা, রয়েছে অন্য দলের প্রার্থীও। তবুও তিন সিটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হবেন বলে ইতোমধ্যে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার আইটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও মনে করেন, নৌকার প্রার্থীরাই জিতবেন তিন সিটিতে। জয় তার ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জেতার কথা।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা যেসব কারণে নৌকার প্রার্থীরা জিতবে বলে মনে করছেন, তা হলো— গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা ভোটে জিতে মেয়র হলেও তারা এলাকার কোনও উন্নয়ন করতে পারেননি। তিন সিটিতে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন বিএনপির প্রার্থী এসব মেয়র। জনগণ এখন উন্নয়নের অগ্রগতিতে বিশ্বাসী। ফলে বিএনপির প্রার্থীদের প্রতি তারা এবার রায় দেবে না। এবার রাজশাহীতে খায়রুজ্জামান লিটন, সিলেটে বদরুদ্দিন আহমেদ কামরান ও বরিশালে তরুণ ও নতুন প্রার্থী সদিক আবদুল্লাহ। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, একমাত্র সাদিক আবদুল্লাহ ছাড়া অন্য দুই প্রার্থী স্থানীয় জনগণের কাছে পরীক্ষিত। রাজশাহীতে খায়রুজ্জামান লিটন ও সিলেটের প্রার্থী বদরুদ্দিন আহমেদ কামরান দুই জনই নির্বাচিত মেয়র ছিলেন। এলাকার উন্নয়নে তারা বিরাট ভূমিকা রেখেছেন। ফলে জনগণ এবার সুযোগ পেয়েছেন তাদের পরীক্ষিত প্রার্থীকে নির্বাচিত করে থেমে যাওয়া উন্নয়ন অগ্রগতির যাত্রাকে আবারও সচল করার। এবার তারা আর ভুল করবে না। অন্যদিকে, বরিশালে নৌকার প্রার্থী একেবারেই নতুন। রাজনীতিতে নতুনের জয়-জয়কার। ফলে বরিশালে নৌকার প্রার্থীকেই বেছে নেবে এলাকার জনগণ। তাছাড়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা তিন সিটি চষে বেড়াচ্ছেন নৌকার প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে। সেখানে তারা বিএনপির লুটপাটের রাজনীতির কথা তুলে ধরছেন এলাকার মানুষের কাছে। এটিও বিজয়ের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন, বিএনপির প্রার্থীরা হামলা-মামলা ও দুর্নীতিগ্রস্ত হিসাবে চিহ্নিত। নৌকার প্রার্থীদের তুলনায় ধানের শীষের প্রার্থীদের ইমেজ সংকট রয়েছে। এছাড়া, জাতীয় রাজনীতিতে বর্তমানে বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা অগোছালো। দুর্নীতি-লুটপাটের অভিযোগ- মামলা রয়েছে তাদের শীর্ষ নেতাদের নামে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, এসব বিবেচনায় নেবে তিন সিটির ভোটাররা। তাই তিন সিটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের বিজয়ের বেশি সম্ভাবনাই দেখছেন দলের শীর্ষ পর্যায়। আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, জাতীয় রাজনীতিতে বিএনপির ব্যর্থতা ফলাও করে প্রচারও করতে পেরেছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। এসব কারণে নৌকার প্রার্থীদেরই জেতার সম্ভাবনা বেশি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তিন সিটিতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকার প্রার্থীদেরই জয়যুক্ত করবে স্থানীয় জনগণ।’ তিনি বলেন, ‘গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় জনগণ বিএনপির প্রার্থীদের ওপরে আস্থা রেখে তাদের জয়ী করেছিল। কিন্তু উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে তারা। ফলে এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদেরই জয়ী করবে তিন সিটির জনগণ।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘তিন সিটিতেই নৌকার প্রার্থীর পক্ষে গণজোয়ার বইছে। নির্বাচনে জনগণ নৌকার প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে এবং এলাকার উন্নয়ন অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখবে।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থীদের প্রতি গত নির্বাচনে তিন সিটিতেই আস্থা রেখেছিল স্থানীয় জনগণ। কিন্তু তাদের ভাগ্যের কোনও উন্নয়ন ঘটেনি। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী করে উন্নয়নের চাকা আবারও সচল করতে নৌকা প্রতীকে ভোট দেবেন তিন সিটির জনগণ।’ তিনি বলেন, ‘তিন সিটিতেই ধানের শীষের প্রার্থীর চেয়ে নৌকার প্রার্থী জনগণের কাছে পরীক্ষিত। ফলে তিন সিটিতেই জয় আশা করছে আওয়ামী লীগ।’
Powered by : Oline IT