রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রফতানি আয়ের তথ্যে গড়মিলের অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। সরকারের পাঁচ বছরে রফতানি আয়ের বিষয়ে এই দুটি প্রতিষ্ঠানের হিসাবে যে গড়মিল ধরা পড়েছে তা দিয়ে ছয়টি পদ্মা সেতু করা সম্ভব হলে তিনি মন্তব্য করেন।
জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণে ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরের প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) তিনি এ অভিযোগ তোলেন।
ফখরুল ইমাম বলেন, ‘ইপিবির হিসাবে গত পাঁচ বছরে রফতানি আয়ের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে রফতানি আয় ৮০ বিলিয়ন ডলার। ইপিবির তুলনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে ২০ বিলিয়ন ডলার কম। এ হিসেবে পাঁচ বছরে লাপাত্তা হয়েছে এক লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকা। রাষ্ট্রের এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথায় আছে? আদৌ আছে কি না তা জানেন না নীতিনির্ধারকেরা। বাংলাদেশ ব্যাংক আর ইপিবির রফতানি আয়ের এই গড়মিলের টাকায় ছয়টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে সম্পদশালীদের সংখ্যা বেড়েছে। দেশে ধনীদের আয় যেভাবে বাড়ছে দরিদ্রদের আয় সেভাবে বাড়ছে না। এর ফলে আয় ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। দেশে বর্তমানে তিন কোটি ৭০ লাখ মানুষ দরিদ্র। প্রায় দুই কোটি অতিদরিদ্র।’
জাপা এমপি রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব করেন।
বক্তব্যে তিনি সরকারকে কিছু বিষয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, ‘এখন শোনা যাচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা ব্যবহার করা হবে না। তাহলে এতদিন এত আন্দোলন চললো কেন? এর অর্থদণ্ড কত?’
তিনি বলেন, ‘চীনের সঙ্গে ২৭টি সমঝোতা স্মারকে সাড়ে ৩৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে। বাস্তবে এর সামান্য বাংলাদেশে এসেছে। কত এসেছে তা জানতে চাই। দেশের বিভিন্নখাতে দুর্নীতির বিরাট অভিযোগ উঠেছে। বৃহৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে কি না তা জানতে চাই।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রস্তাবিত ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রফতানি আয়ে ৪০ বিলিয়ন ডলার যুক্ত হবে কি না? এর মাঝে সরকার চীন-ভারতের কোনও টানাপড়েনের আশঙ্কা করছে কী না?
টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে অভিযোগ তুলে ফখরুল ইমাম প্রধানমন্ত্রী উদ্দেশে বলেন, ‘লুটেরা কারা? এরা কি দলে? সরকারে? না আশপাশে? এদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাই।’
Powered by : Oline IT