বেশ কিছু দেশ ইতোমধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক’সহ সেই সকলের ওপর, যারা নতুন ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া দেশে সম্প্রতি ভ্রমণ করেছেন।এবার তুরস্কেও শনাক্ত হলো করোনাভাইরাসের নতুন ধরন। ছবি: নিউইয়র্ক টাইমস
গত শুক্রবার থেকে ব্রিটেনের পর্যটকদের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে তুরস্কের দরজা। ইংল্যান্ডে প্রথম আবির্ভূত হওয়া নতুন ধরনের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ১৫ জন শনাক্ত হয়েছে তুরস্কে, যাদের সকলেই সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে আগমনকারী।
তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেতিন কোকা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নতুন ধরনের ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ১৫ জন ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশব্যাপী অনুসন্ধান চালিয়ে ব্রিটেন থেকে আগমনকারীদের কাছে ছাড়া অন্য কোথাও এই ভাইরাস শনাক্ত করা যায়নি।যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে সতর্ক অনেক দেশ। ছবি: নিউইয়র্ক টাইমস
এই শনাক্তের মধ্য দিয়ে ৮ ডিসেম্বর ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্তের পর থেকে অন্তত ৩৩টি দেশে শনাক্ত হলো করোনার এই নতুন রূপ, এবং এর মাঝেই বিশ্বের ৪০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ব্রিটেন থেকে আসা পরিভ্রমণকারীরা।
বেশ কিছু দেশ ইতোমধ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক’সহ সেই সকলের ওপর, যারা নতুন ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া দেশে সম্প্রতি ভ্রমণ করেছেন।
ব্রিটেন এবং আরও ১৮টি দেশের পরিভ্রমণকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ফিলিপাইন। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় রাজ্য হিসেবে ফ্লোরিডায় এই নতুন ভাইরাস শনাক্ত হবার পর যুক্তরাষ্ট্রও চলে এসেছে নিষেধাজ্ঞার তালিকায়।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রে সংক্রমণের মাত্রা অস্বাভাবিক রকম বেশি হওয়ায় অনেক দেশ ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ দেশে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছে।গবেষকরা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরনকে। ছবি: নিউইয়র্ক টাইমস
এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া এবং কলোরাডোতেও নতুন ধরনের এই করোনা শনাক্ত হয়েছে। যদিও আক্রান্তদের কেউই সম্প্রতি কোথাও ভ্রমণ করেননি, তাই পরিষ্কারভাবে এক অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে জনমনে।
নতুন এই ভাইরাস বি.১.১.৭ নামে পরিচিত, যা আগে কোভিড-১৯-এর কারণ হিসেবে বিবেচিত হতো না; কিন্তু এর সঞ্চালনের ফলে সংক্রমণের তীব্রতা এবং আরও গুরুতর অবস্থায় পৌঁছাবার আশঙ্কা বাড়ে।
অবশ্য অনেক দেশ এই পরিস্থিতির সঙ্গে সংগ্রামরত অবস্থাতেও প্রত্যাশা করছে ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের।
নতুন ধরনের এই ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়া দেশের তালিকা দ্রুত বড় হচ্ছে।
শুক্রবার পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালিকাটিতে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, তুরস্ক, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, কানাডা, চিলি, চীন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, আইসল্যান্ড, ভারত, পাকিসান, আয়ারল্যান্ড, ইসরায়েল, ইতালি, জাপান, জর্ডান, লেবানন, মাল্টা, নেদারল্যান্ড ছাড়াও মোট ৩৩টি দেশের নাম।
এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ভাইরাসের অনুরূপ আরেকটি সংস্করণ আবির্ভূত হয়েছে, যা বি.১.১.৭-এ বিদ্যমান মিউটেশনের একটি অংশের মতোই। শনাক্ত হওয়া ভাইরাসটি ৫০১.ভি২ নামে পরিচিত, যার ৯০ শতাংশ নমুনার জেনেটিক সিকোয়েন্স নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় বিশ্লেষণ করা হয়েছে দেশটিতে।জাপান রয়েছে সতর্ক অবস্থায়। ছবি: নিউইয়র্ক টাইমস
দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত নতুন ভাইরাসের দুটি কেস শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ। উভয় ক্ষেত্রেই, আক্রান্ত ব্যক্তিরা সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে ভ্রমণ করা ব্যক্তিদের সংস্পর্শে ছিলেন।
একই ধরনের ভাইরাস শনাক্ত করেছে সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, জাম্বিয়া ও ফ্রান্স।
অন্যদিকে, গত ২৪ ডিসেম্বর আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর প্রধান জন নেকেঙ্গাসং নাইজেরিয়ায় আরেকটি ভাইরাস শনাক্তের কথা ঘোষণা করেন, যার নাম বি.১.২০৭।
Powered by : Oline IT