শিশু ছাড়াও ধর্ষণের শিকার জীবিত বা মৃত নারীর সব ধরনের ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হাইকোর্টের আদেশের লিখিত অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের সইয়ের পর চার পৃষ্ঠার এ আদেশ প্রকাশিত হয়।
লিখিত আদেশে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার নারীর ছবি, নাম, পরিচয়, ঠিকানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্রসহ অন্যান্য পরিচয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ বন্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যানকে জানাতে বলেছেন আদালত।
এর আগে গত ৮ মার্চ ধর্ষণের শিকার জীবিত বা মৃত নারীর সব ধরনের ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর ছবি ও পরিচয় প্রকাশ বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
গত ১৯ জানুয়ারি ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার জীবিত বা মৃত নারীর ছবি ও পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা বিধানের বাস্তবায়ন চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। একইসঙ্গে রিটে এ ধরনের ছবি প্রকাশে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন এ রিট দায়ের করেন।
পরে ব্যারিস্টার মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার কোনও নারীর ছবি প্রকাশে আইনে বাধা থাকলেও হরহামেশাই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে। এতে তাদের পরিবারের সদস্যরা সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছেন। বিশেষ করে সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যাওয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের এক শিক্ষার্থীর ছবি দেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছবি প্রকাশের ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে। তাই ভিকটিমদের ছবি ও পরিচয় প্রকাশ বন্ধের জন্য রিট দায়ের করেছিলাম।’
প্রসঙ্গত, এর আগে গণমাধ্যমে ধর্ষণের শিকার শিশুদের নাম, পরিচয় ও ছবি প্রকাশ বন্ধেও নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
Powered by : Oline IT