সেনা অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে সমর্থন দেওয়ায় মিয়ানমারের এক প্রখ্যাত অভিনেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মান্দালয় শহরে পুলিশের গুলিতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া বিক্ষোভ উৎসাহিত করায় আরও পাঁচ সেলিব্রেটিকে খুঁজছে পুলিশ। এসব অভিযোগে তাদের দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শহরে টানা বিক্ষোভ চলছে। সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, কবি, পরিবহন শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সামরিক শাসন অবসানের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। অভ্যুত্থানবিরোধীরা সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী নেত্রী অং সান সু চি’র মুক্তিরও দাবি জানাচ্ছেন। এর আগে মাথায় গুলিবিদ্ধ এক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে গত শনিবার দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালায়ে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ছোড়া গুলিতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত এবং অন্তত ২০ জন আহত হয়।
নাগরিক অসহযোগ আন্দোলনে উৎসাহ দিয়ে উস্কানিবিরোধী আইন ভঙ্গের অভিযোগে গত বুধবার ছয় সেলিব্রেটির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে মিয়ানমারের সেনা সরকার। তাদের একজন হলেন অভিনেতা লু মিন। ইয়াঙ্গুনের বেশ কয়েকটি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন এই অভিনেতা।
শনিবার লু মিনের স্ত্রী খিন সাবাই উ ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে জানিয়েছেন, রাতে তাদের ইয়াঙ্গুনের বাড়িতে পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘তারা জোর করে দরজা খুলে তাকে নিয়ে গেছে। কেন তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা আমাকেও বলা হয়নি। তাদের থামাতে পারিনি। আমাকে কিছু জানানো হয়নি।’
এই অভিনেতাকে গ্রেফতারের প্রসঙ্গে জানতে সামরিক বাহিনী ও নতুন সেনা সরকারের মুখপাত্র জাও মিন তুনের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
মিয়ানমারের অ্যাকটিভিস্ট গ্রুপ অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে শনিবার মোট ৫৬৯ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া দিনের বেলায় মান্দালয়ে দুই বিক্ষোভকারী নিহতের পর রাতে পৃথক এক ঘটনায় ইয়াঙ্গুনে এক নাইটওয়াচম্যান গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে। রেডিও ফ্রি এশিয়ার মিয়ানমার সার্ভিস জানিয়েছে, পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গুলি করেছে তবে এর কারণ স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, নিরাপত্তা অভিযানের নামে গ্রেফতারের আশঙ্কা বাড়তে থাকায় মিয়ানমারের বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় প্রহরা বসিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
Powered by : Oline IT