পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও শীতের তীব্রতা কমেনি। সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলার তেঁতুলিয়ায় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। গতকালের মতো আজও সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এখানে। সকাল ৯টার পর সূর্যের মুখ দেখা গেলেও কমেনি শীত। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে থাকা জেলার আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের সাতখামার গ্রামের মহিরউদ্দিন বলেন, ‘হামেরা কাহার ঠে কোনও কিছু চাহিবা পারি না। জারে (শীতে) কষ্ট পাছি বারে কিন্তু কাহ হামাক কোনও কিছু দিলনি।’
জেলার বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের মাঝগ্রাম এলাকার হকিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিনই সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা গ্রামের লোকজন পাই না। মেম্বার-চেয়ারম্যানরা গ্রামের দু-একজনকে দিলেও বেশির ভাগ শীতার্ত মানুষই কম্বল বা অন্য কিছু পায় না।’
তেঁতুলিয়া উপজেলার খুনিয়াভিটা এলাকার আশরাফুল ইসলাম জানান, তেঁতুলিয়ায় শীত বেশি, কিন্তু চাহিদার তুলনায় শীতবস্ত্রের বরাদ্দ খুবই কম। আর যে কম্বল দেওয়া হচ্ছে তা এই শীত মোকাবিলার ক্ষমতা রাখে না।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক জীতেন্দ্রনাথ রায় জানান, সোমবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৬টায় এখানে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গতকাল রবিবার তেঁতুলিয়া ও রাজারহাট যৌথভাবে সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। সকাল সকাল সূর্য উঠেছে এ কারণে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে।
এদিকে শীত বেড়ে যাওয়ায় জেলা শহরসহ পাঁচ উপজেলার হাসপাতালগুলোতে শীত ও শীতজনিত রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ারুল ইসলাম জানান, প্রতিদিনই ৮-১০ জন করে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীত ও শীতজনিত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আবার ৪-৫ জন করে হাসপাতাল ত্যাগ করছেন। এখন পর্যন্ত এটি স্বাভাবিক রয়েছে। শীত আরও বেড়ে গেলে হয়তো রোগী ভর্তির হার বেড়ে যাবে। চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ সবকিছুই পর্যাপ্ত রয়েছে।
Powered by : Oline IT