মুন্সিগঞ্জে একই পরিবারের তিনজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। বুধবার রাত নয়টার দিকে শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী ইউনিয়নরে শ্রীধরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন আবদুল মোমিন (৫০), তার স্ত্রীর লুবনা বেগম(৪৪) এবং তাঁদের ছোট মেয়ে সানজিদা আক্তার (৯)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোমিন তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের দুই সন্তানসহ চারজনের সংসার। বড় মেয়ে স্বর্ণা ও ছোট মেয়ে সানজিদা দুজনেই শ্রীধরপুরের একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। মোমিন মাছের ব্যবসা করতেন। মেয়েদের পড়াশোনার খরচ জোগাতে কষ্ট হয়ে যেত তাঁর। তাই মোমিন বিভিন্ন স্থান থেকে ধার করতে শুরু করেন। এই ধারের টাকা পরিশোধ করতে ক্ষুদ্রঋণ নেন। সংসার চালাতে হিমশিম, তার ওপরে ঋণের চাপ। এগুলো নিয়ে প্রায়ই মোমিন ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। কিছুদিন আগে ঝগড়ার কারণে লুবনা তাঁর বাবার বাড়ি চলে যান । সোমবার মোমিন তাঁর শ্বশুরবাড়ি গিয়ে মুচলেকা দেন যে, আর কখনো স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করবেন না, মারধরও করবেন না। এই প্রতিশ্রুতিতে তাঁর স্ত্রী ও মেয়েদের বাড়ি আনেন।
মোমিনের বড় মেয়ে স্বর্ণ আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ বিকেলে আমার বাবা আমাদের সবাইকে নতুন জামাকাপড় কেনার জন্য বাজারে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। এ সময় আমি যেতে রাজি না হওয়ায় আমার মা আর ছোট বোনকে নিয়ে চলে যান। সন্ধ্যার পরও তাঁরা বাড়ি না ফিরলে আমার দুশ্চিন্তা হতে থাকে। পরে শুনতে পাই তাঁরা তিনজন বিষ খেয়েছেন এবং আমাদের বাড়ির অদূরে একটি জমির মধ্যে তাঁদের লাশ পাওয়া গেছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইলিয়াস প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোমিন মাছের ব্যবসা করেন। আমি এখানে এসে শুনেছি মোমিন আর্থিক সংকটে ছিলেন। মমিন, লুবনা ও সানজিদাকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তাঁরা মারা যান।’
এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আলমগীর হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনজনই বিষ খেয়ে মারা গেছেন। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছি। এ ব্যপারে আমাদের তদন্ত চলছে।’ তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে আসলেই কীভাবে মারা গেছেন।