আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ‘গুমের সংস্কৃতি’ চালু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। এই গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করতে হবে বলে জানান তিনি।
সোমবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ কেমন দেশ, কেমন রাষ্ট্র, কেমন সরকার আমরা বানালাম, যেখানে আমাদের সন্তানেরা নিখোঁজ হয়ে যাবে। যাদের কোনও হদিস খুঁজে পাওয়া যাবে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তাদেরকে তুলে নিয়ে যাবে, সরকার তার কোনও জবাব দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের কাছে গুম শব্দটা পরিচিত ছিল না। এই ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে এই গুম কথাটি চালু হয়েছে। যারাই একটু প্রতিবাদী, সচেতন, তাদেরকে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য এবং গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য যখনই আন্দোলন করে, তখনই তাদেরকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, গুম করে দেওয়া হয়। সরকারের কাছে গেলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গেলে তারা বলেন, আমরা কিছুই জানিনা।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম একটি মানবতার সমজ গঠন করতে সক্ষম হবো বলে। গণতন্ত্রের পক্ষের একটি রাষ্ট্র আমরা তৈরি করতে পারবো। মানুষের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই অধিকারগুলোকে আজকে অবৈধ সরকার শক্তি প্রয়োগ করে, বুলেট এবং পিস্তল দিয়ে মানুষের কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে চায়। আজকে গুম হওয়া পরিবারগুলোর দায়িত্ব কে নেবে? ৮ থেকে ১০ বছর ধরে যাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে ৮-৯ বছর ধরে আমাদের দলের অধিক নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছে। গুম হওয়া ইলিয়াস আলীর মেয়ে এখন তো দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে, কখনও তার বাবা ফিরে আসবে। তার বাবা ফিরে আসে না। এই যে ছোট ছোট বাচ্চাদের আহাজারি আপনারা শুনলেন, আমরা তো আমাদের চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। অসহায়ত্বের বেদনা, যন্ত্রণা আমাদেরকে কুড়ে কুড়ে খায়। আমরা এখান থেকে মুক্তি চাই। আমরা অবশ্যই আমাদের এই মানুষগুলোকে ফিরে পেতে চাই। পরিবার তাদের যেন ফিরে পেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারকে বারবার আমরা আহ্বান করেছি। তারা গেলো কোথায় খুঁজে বের করার দায়িত্বতো আপনাদের। পরিবারের কাছে তাদেরকে ফিরিয়ে দিন। তাদেরকে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় ইতিহাসের কাঠগড়ায় আপনাদেরকে জবাব দিতে হবে। জনগণের আদালতে আপনাদের বিচার করা হবে।’
Powered by : Oline IT