ফিরোজ মাহমুদ, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) : সরকারি নির্দেশনা মেনে হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেনা প্রবাসীরা। গত ১৫ দিনের মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসী ব্যক্তিরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে।
এতে করে আতংকিত উপজেলাবাসী। বেশি উৎকণ্ঠা হচ্ছে ইতালী থেকে আসা প্রবাসীদের নিয়ে। হোম কোয়ারেন্টাইন না মানায় বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সকালে উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে এক আমেরিকান প্রবাসীকে ভ্রাম্যমান আদালতে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মিরসরাইয়ে ৭জনকে হোম কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে নিষেধ করা হলেও অনেক প্রবাসী নির্দেশনা মানছেন না। অবাধে হাটবাজার, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বারবার সতর্ক করা হলেও তারা ভ্রƒপে করছেন না। অথচ তাদের মধ্যে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ভয়াবহ বিপদ হতে পারে।
জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গত ১৫দিনের মধ্যে বিদেশ থেকে প্রায় ১৪ জন প্রবাসী আসছে। প্রশাসনের কাছে এদের সুনির্দিষ্ট আকারে কারো তালিকা নেই।
উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নে বিদেশ থেকে এসে প্রকাশ্যে ঘুরছেন মোহাম্মদ সালেহ, ওমর ফারুক, তুহিন। বারইয়ারহাট পৌরসভায় জামালপুর গ্রামে প্রকাশ্যে ঘুরছেন দুবাই প্রবাসী একজন।
কাটাছরা ইউনিয়নে বামনসুন্দর দারোগারহাট বাজারে নুরুল হুদা, খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ফেনাফুনি গ্রামে মোহাম্মদ সুমন, জেবাল হোসেন, জাহেদ প্রকাশ্যে ঘুরছেন।
খৈইয়াছরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মাহফুজুল হক জুনু বলেন, গত ৩-৪ দিন আগে আসা ১ প্রবাসী বৃহস্পতিবার সকালে বড়তাকিয়া বাজারে বাজার আসলে আমি তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিই। তাকে নজরদারিতে রাখার জন্য স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি সদস্যকে বলি।
বামনসুন্দর দারোগারহাট বাজারের ব্যবসায়ী মঈন উদ্দিন বলেন, ডুবাই থেকে আসা নুরুল হুদাকে বুধবার সন্ধ্যায় বাজারে কেনাকাটা করতে দেখি। এসময় তাকে বাজারে না থেকে বাড়িতে চলে যেতে বলি। তাকে দেখে অনেকে ভয়ে দূরে ছিলো।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমিন জানান, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, সৌদি আরব, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ৭ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। যারা এ নির্দেশনা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪টি বেড নিয়ে একটি আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২ টি পৌরসভায় চেয়ারম্যান ও মেয়রদের সভাপতি করে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সাব কমিটি করা হয়েছে।
কেউ প্রবাস থেকে দেশে আসলে বা হোম কোয়ারেন্টাইন নাম মানলে দ্রুত সময়ের মধ্যে তথ্য দিতে তাদের বলা হয়েছে। জনসমাগম কমাতে উপজেলার প্রত্যেকটি পর্যটনস্পট অর্নিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়াও বারইয়ারহাট পৌরসভার ও আবুতোরাব স্কুল মাঠে আয়োজিত মেলাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
Powered by : Oline IT